মোহম্মদ রবিউল ইসলাম, ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি॥
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে অসহায় রিক্সা চালকের বউ জুলেখা ভিডাব্লিউবি’র (শিশু মাতা) কার্ডের জন্য কানের সোনা বন্ধক রেখে (সুদের উপর) মেম্বারকে টাকা দিয়েও কার্ড না পেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে । অবশেষে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে জুলেখা!
অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার গোহালবাড়ী ইউনিয়নের খালেআলমপুর গ্রামের অসহায় রিক্সাচালক আব্দুস সামাদের বউ জুলেখা স্বামী-সংসারে অতি দারিদ্র্যতার কষাঘাতে স্বামীর সামান্য আয়ের টানাপোড়েনের মধ্যে কোন রকমে অন্যের সাহায্য-সহানুভূতি নিয়ে সংসার চালান।
জুলেখা বেগম বলেন, পাড়া-পড়শীর মুখে শুনে ভিডাব্লিউবি’র দুই বছর মেয়াদে কার্ডের জন্য তার ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুর রাকিবের সরণাপন্ন হন। উক্ত মেম্বার তার নিকট সাড়ে ৫ হাজার টাকা দাবী করে। গরীবের সংসারে টাকা-পয়সা জোগাড় না থাকায় আমার কানের সোনা বন্ধক রেখে মেম্বারকে ৫৫০০ টাকা প্রদান করি।
জুলেখা আরো বলেন, ভিডাব্লিউবি (শিশু মাতা) কার্ড সরকারীভাবে বিতরণ শেষ হলেও আমাকে ডেকে মেম্বার আব্দুর রাকিব বলেন, আরো টাকা লাগবে! তা-না হলে তোমার কার্ড হবে না বলে আমাকে পাঠিয়ে দেন। আমি কার্ড না পেয়ে প্রতিকারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। মেম্বার আমাকে কার্ড না দিলে আমি টাকা ফেরৎ চাইলে আমার দেয় সাড়ে ৫ হাজার টাকা ফেরৎ দেয়না। উপায়ন্তর না পেয়ে ১২ আগষ্ট ২০২৫ ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
জুলেখা বেগম এ প্রতিবেদককে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, গরীবের সংসার হামার, হামা নুন আনতে পান্তা ফুরায় । হামি আব্দুর রাকিব মেম্বারের ন্যায্য বিচার চাহি! আপনারা দশভাই হামার গরীব-অসহায় পরিবারের জন্য ভাল কিছু করলে আল্লাহ্ তোমাঘেঁরে ভাল করবে ভাই বলেই জুলেখা কেঁদে ফেললেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
ঘটনার বিষয়ে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াসিন আলী বলেন, বিষয়টি আমার সচিবের কাছে শুনেছি। তবে আমার কাছে কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে একজন গরীব-অসহায় রিক্সা চালকের বউয়ের কথা শুনে চেয়ারম্যান দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন, এ ধরণের মেয়ের কার্ডটা করা প্রয়োজন ছিলো বলে তিনি জানান।